পাঠ-৩ : মাদকাসক্তির ঝুঁকি, ঝুঁকি মোকাবেলার কৌশল :

নবম-দশম শ্রেণি (মাধ্যমিক ২০২৫) - শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা - মাদকাসক্তি ও এইডস | | NCTB BOOK
2
2

যারা মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে তাদের সংখ্যা অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ক্রমান্বয়ে বেড়ে চলেছে। মাদকাসক্তদের একটা বড় অংশ হচ্ছে কিশোর-কিশোরী ও তরুণ। এ ছাড়াও রয়েছে পথশিশু, শ্রমজীবী শিশু, বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত লোকজন যেমন- শ্রমিক, ব্যবসায়ী, রিকশাচালক, বাস-ট্রাক চালক, অন্যান্য পেশার লোকজন এবং যৌনকর্মী। তাদের মধ্যে মাদকাসক্তি বিস্তারের বিভিন্ন কারণের মধ্যে প্রধান কারণ হচ্ছে মাদক প্রাপ্তির সহজলভ্যতা। অন্যান্য যে সব কারণ রয়েছে তা হলো হতাশা, বেকারত্ব, পারিবারিক অশান্তি, কৌতূহল, মন্দ বন্ধুদের কাছ থেকে এক ধরনের চাপ ইত্যাদি।

মাদকাসক্তির ঝুঁকি : মাদকদ্রব্য গ্রহণের জন্য কিশোর-কিশোরীদের উপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টি করা হয়। বন্ধু বা সহপাঠীদের মধ্যে কেউ মাদকসেবী থাকলে সে প্রস্তাব দিতে বা চাপ সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া যারা মাদক ব্যবসায়ী বা মাদক বিক্রেতা তারাও কিশোর-কিশোরীদের মাদক গ্রহণের জন্য নানাভাবে প্ররোচিত করতে পারে। এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বন্ধুরা চাপ সৃষ্টি করলে যদি কেউ চাপের কাছে নতি স্বীকার করে মাদক গ্রহণ করা শুরু করে তবে তার সর্বনাশ ঘটে। আবার মাদক গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করলে বন্ধুত্ব নষ্ট হয়। বন্ধু বা সহপাঠী ছাড়া অন্য কেউ যদি মাদক গ্রহণের জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং তা প্রত্যাখ্যান করলে তার দ্বারা ক্ষতির আশংকা থাকে। এ ধরনের ঝুঁকির পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয় সেদিকে সতর্ক থাকা প্রয়োজন ।

ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি মোকাবেলা : প্রথমেই দেখতে হবে মাদক গ্রহণের জন্য যে বা যারা প্ররোচনা দিচ্ছে তার বা তাদের আচরণ, ক্ষমতা, প্রভাব কেমন। এসব দিক বিবেচনা করে মাদক গ্রহণের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হবে যাতে কোনো ক্ষতির আশংকা না থাকে। প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করার সময় নিজেকে সংযত রাখতে হবে। আর যদি সরাসরি 'না' বলতে পারা না যায় তাহলে কৌশলে পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য সে স্থান ত্যাগ করতে হবে। চাপ সৃষ্টি করা ব্যক্তি যদি বন্ধু বা পরিচিত জন হয় তবে এমনভাবে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করতে হবে যেন সম্পর্ক নষ্ট না হয়। আর যদি মনে হয় যে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান কোনো সমস্যার সৃষ্টি হবে না তাহলে তাকে মাদকের কুফল সম্পর্কে বোঝাতে হবে এবং এ পথ থেকে তাকে সরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। আর মাদক গ্রহণের জন্য যদি চাপ সৃষ্টিকারী ব্যক্তি কোনো ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে তবে অবিলম্বে মা-বাবা বা অভিভাবক কিংবা মাদ্রাসার শিক্ষকদেরকে বিষয়টি জানাতে হবে। সর্বনাশা মাদক থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হলে কৌতূহলের বশবর্তী হয়েও কোনো মাদক গ্রহণ করা যাবে না। যে কোনো মাদক নিঃসন্দেহে নিজের, পরিবারের ও সমাজের জন্য খারাপ। সর্বোপরি মাদক গ্রহণ না করার জন্য দৃঢ় প্রত্যয়ী হতে হবে।

কাজ-১ : মাদকাসক্তির ফলে নিজের ও পরিবারের উপর কী কী প্রভাব পড়ে ?

কাজ-২ : কোনো ব্যক্তি মাদকগ্রহণ করে শারীরিক, মানসিক, সামাজিক, আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এর মধ্যে একটি ক্ষেত্রের সমস্যা উল্লেখ করে তার সমাধান কী হবে তা সংক্ষেপে লেখ ৷

 


 

Content added || updated By
Promotion